'' প্রতারক স্ত্রীর শেষ পরিণতি ,

 


গল্পটি প্রাপ্ত বয়ষ্কদের জন্য, যদি তোমার বয়স ২০ থকে কম হয়ে থাকে তাহলে গল্প টা পড়বেন না?

আমি অফিসে ছিলাম এমন সময় আমার বন্ধু সোমনাথের ফোন, এক্ষুনি একটু আমার হোটেলে আয় একটা ছেলের সঙ্গে তোর স্ত্রী কে দেখলাম, ওরা আমার হোটেলে একটা রুম নিয়েছে। 

ওরা এখন রুমের ভেতরে আছে। আমি বললাম তুই কি করে জানলি, তোকে তো কখনো রাগিনী-র সঙ্গে মিট করাইনি। 

তুই ভুলে গেলি, তোর বিয়ের ফটোগুলো যে আমাকে দেখিয়ে ছিলি। আচ্ছা থাক আমি এক্ষুনি আসছি।

 অফিস থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেলাম, তারপর প্রায় আধা ঘন্টা পর ওর হোটেলে পৌঁছালাম।

 তারপর সোমনাথের থেকে মাষ্টার চাবি নিয়ে ভেতরে ঢুকলাম। ভেতরে যে আমার জন্য এমন সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে তা আমি জানতাম না। 

দেখি ছেলেটা আর রাগিনী বিছনাতে, রাগিনীর শাড়ি, ব্লাউজ খোলা। শায়াটা কোমর অবধি তোলা, ছেলেটার মুখ রাগিনীর শায়ার ভেতরে।

 দরজা খোলার শব্দে রাগিনী আমার দিকে তাকালো, আমাকে দেখে যেন ভূত দেখার মতো দেখলো। তারপর নিজেত শাড়ি নিয়ে নিজেকে ঢাকার একটা বৃথা চেষ্টা করতে লাগল।

 আমি আর এক মূহুর্ত না অপেক্ষা করে সোজা হোটেলের বাইরে আসলাম..!! এরপর আমার মাথা কাজ করছিল না, যে স্ত্রী কে আমি এত ভালোবাসলাম সে যে আমাকে এইরকম ভাবে প্রতারনা করবে তা জীবনেও ভাবিনি আমি। 

একবার ভাবলাম আত্মহত্যা করব কিন্তু আমার ২ বছরের মেয়ে সোমার মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠল, কী করে রেখে যাই ওকে এই প্রতারকের কাছে। 

তাহলে যে মরেও শান্তি পাবো না, আমাকে সোমার জন্য হলেও বাঁচতে হবে। 

তারপর কেটে গেছে প্রায় ২০ টা বছর, সেদিনের পর থেকে রাগিনী-কে আর দেখিনি, আমার বাড়িতেও আর আসেনি ওর খোঁজও করিনি। কিন্তু গত পরশুদিন আমার কাছে একটা চিঠি আসে। চিঠি খুলে দেখলাম, তাতে লেখা 

প্রিয় রনি, 

    আমি জানিনা কোনোদিন আমাকে ক্ষমা করতে পারবে কিনা, পারলে আমাকে ক্ষমা            করে দিও। 

আমি জানি আমি যেটা করেছি সেটা কোন ভুল নয়, সেটা অন্যায় ও পাপ। আর তার শাস্তি আমি এখনো পাচ্ছি, আর এই দেহে প্রাণ থাকা পর্যন্ত পেয়ে যেতে হবে। 

একটা থাকা মেয়েকে তুমি প্রথম দেখায় ভালোবেসে বিয়ে করেছিলে, আর আমি সেই ভালোবাসার মর্যাদা রাখতে পারিনি। 

আমি স্বাগত-কে ভালোবাসতাম বিয়ের আগে, ও বিয়ের আগে আমার সাথে ব্রেকাপ করে চলে যায় দেশের বাইরে। 

আমি ভাবলাম ওর সাথে যখন ব্রেকাপ হয়ে গেছে আর তুমিও যখন আমাকে ভালোবাসো বললে তখন তোমার সঙ্গে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেব, তারপর তোমার ভালোবাসা দেখলাম।

 আমিও তোমাকে ধীরে ধীরে ভালোবাসতে শুরু করছিলাম, ঠিক সেই সময় কোথা থেকে স্বাগত আবার ফিরে আসে।

 ফোন করতে থাকে, বলতে থাকে ভুল করেছে সে, তোমাকে ছেড়ে দিতে বলে। আবার সে আমাকে বিয়ে করবে, প্রথম প্রথম না চাইলেও বার বার বলায়, আমি কেমন যেন দুর্বল হয়ে পড়ি তার প্রতি।

 তারপর কিছুদিন পরে আমাকে হোটেলে যেতে বলে, আমিও যেন কেমন ঘোরের মধ্যে ছিলাম। না চাইলেও না করতে পারিনি, আর সেইটা ছিল আমার বড় ভুল।

 সেদিন তুমি হোটেল থেকে ফেরার পরে আমি আর সাহস করতে পারিনি তোমার সামনে যাবার।

 তখনও সেই স্বাগত নামের আবরনটা যেন চেপে ছিল, ওর সাথে চলে যাই। প্রথম মাসখানেক ভালোই চলছিল, কিন্তু তারপর থেকে ধীরে ধীরে ওর আসল রুপটা সামনে আসতে থাকে, শুরু করে আমার উপর এক অমানবিক অত্যাচার। 

প্রত্যেকদিন বাইরে থেকে মদ খেয়ে আসত তারপর আমার ওপর ধর্ষন করত।

তখনই বুঝতে পারি তোমার আর সোমার প্রতি করা আমার অন্যায়। তার কিছুদিন পর আমি ওখান থেকে পালিয়ে আসি, এই মুখ তোমাকে দেখাতে পারব না তাই নদীতে ঝাঁপ দিয়েও আত্মহত্যার চেষ্টা করি, কিন্তু ভাগ্যে তোমার প্রতি অন্যায়ের ফল তখনও ভোগ করা হয়নি তাই মরতেও পারলাম না। 

একজন মাছুয়া আমাকে নদী কিনারে পায়, তারপর সে আমাকে সুস্থ করে তোলে দিয়ে একদিন রাতে সেও আমাকে ধর্ষন করে এক পরে এক পতিতালয়ে আমাকে বিক্রি করে। সেখানে আমার বাকি জীবন কাটে, এক সময়ে আমার শরীর অসুস্থ হয়ে যায়।

 অনেক টেষ্ট করানো হয়, শেষ পর্যন্ত জানা যায় আমার নাকি HIV Positive.তারপর পতিতালয় থেকেও বের করে দেয়, এরপর আমার যাওয়ার কোন আর জায়গা থাকে না তাই রাস্তাতে থাকতে হয়। 

সেখানেও কোন এক মদ্যপ ব্যাক্তি আমাকে ধর্ষন করে, সেই সময়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।

যখন জ্ঞান ফেরে আমি তখন একটা হাসপাতালে নিজেকে দেখি, শুনেছিলাম কোনো এক সহৃদয় ব্যাক্তি রাস্তায় অজ্ঞান অবস্থা পড়ে থাকতে দেখে হাসপাতালে দিয়ে গেছে। 

ডাক্তার বলেছে আর বেশিদিন বাঁঁচবো না, তাই তোমাকে একবার ক্ষমা চেয়ে চিঠিটা লিখলাম। যখন চিঠিটা হাতে পাবে তখন হয়তো আমি এই জগতের মায়া চলে গেছি, তাই একবার শেষবারের মতো ক্ষমা চাইলাম পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও। 

আর একটা অনুরোধ মেয়েটাকে কখনো জানতে দিও না তার এই দুর্ভাগা মায়ের কাহিনী। বিদায়

 ইতি'

 তোমার রানী,

চিঠি টা পড়ে অনেক দিনের জমে থাকা অভিমানে, কষ্টে নিজে থেকেই না কেঁদে পারলাম না। 

ও যেমনই হোক ওকে আমি খুবই ভালোবাসতাম আর এখনও হয়তো বাসি। নাহলে ওর কষ্টটা শুনে নিজেকে কেন ধরে রাখতে পারছি না। 

চিঠিটা রেখে ওর পেছনে থাকা হাসপাতালের ঠিকানাতে গেলাম, গিয়ে শুনি ৩ দিন আগেই আমার রাগিনী মারা গেছে।

 বাড়িতে এসে ষ্টোর রুমটা খুলে ওর সেই পুরোনো জিনিসপত্র বুকে রেখে কান্না করলাম। অনেক বছর পর আজ মন খুলে কাঁদছিলাম?

                                                             ''সমাপ্ত,


Powered by Blogger.